পুনরায় কাস্মীরে বাড়ছে সন্ত্রাস আতংক 

কাশ্মীর ও জম্মুতে গত বিশ দিনের মাঝে পুরনায় সন্ত্রাসবাদ হামলা হয়েছে। গত সোমবার ৩ জন সন্ত্রাসী জম্মু ও কাশ্মীরের আখনুরে নিয়ন্ত্রনরেখার কাছে এক সেনা এম্বুলেন্সে গুলি চালায়। সন্ত্রাসীরা কাশ্মীরের বালাতাল এলাকায় গুলি চালিয়ে কাছের এক জঙ্গলে ডুকে পরে। সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় সেনা অভিযান। তারপর সোমবার একজন এবং মঙ্গলবার দুজন সন্ত্রাসীর মৃত্যু হয়েছে।

সন্ত্রাসীরা গুলমার্গে গত সপ্তাহেও সেনার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিলো।সেই গুলিতে দুজন সেনা ও দুজন মালবাহক আহত হন। পরবর্তীতে হাসপাতালে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এই হামলার মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেও সন্ত্রাসীরা পুলওয়ামার ত্রালে বাহিরের রাজ্যের এক শ্রমিককে গুলি করে গুরুতর আহত করেছেন। 

গত ৯ অক্টোবর সন্ত্রাসবাদীরা দুইজন সেনা কর্মীকে অপহরণ করে। একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও অন্যজনের গুলিবিদ্ধ আহত দেহ পরে পাওয়া যায়।

আবার ১৮ অক্টোবর সন্ত্রাসবাদীরা এক শ্রমিক যিনি সোপিয়ানে বিহার থেকে এসেছে তাকে গুলি করে হত্যা করে। তার আহত দেহ একটি ক্ষেতে পাওয়া যায়।তথ্য সূত্রে জানা যায় ১২ টি বুলেট লেগেছিলো তার দেহে।

তারও কিছু দিন আগে বাহিরের রাজ্য থেকে আসা ছয়জন শ্রমিক ও একজন কাশ্মীর চিকিৎসকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসবাদীরা। সেনামর্গে নির্মিত একটি টানেলের কাছে সড়ক নির্মাণ সংস্থার একটি সাইটে ঢুকে কে এ আক্রমণ চালায়।

কাস্মীরের জানিয়েছেন 

ন্যাশনাল কনফারেন্সে নেতা উমর আব্দুলাহ বিধানসভা নির্বাচনের পর জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।

তিনি কাশ্মীরে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহনের পরও বেশ কয়েকবার সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী উমর আব্দুল্লাহ বলেছেন,বর্তামানে পুনরায় জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলা বেড়ে যাওয়ায় তিনি উদ্বিগ্ন এবং তিনি এই হামলার তীব্র নিন্দা করছেন।

কংগ্রেস বলেছে, এনডিএ-এর ব্যর্থ নিয়ন্ত্রণ এর জন্যই গুলমার্কে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে। কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এনডিএ সরকার।এজন্য তাদের সব দায় নিতে হবে এবং নিরাপত্তা বাহিনী, সেনা কর্মী ও সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হবে। 

বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের সংঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক ডিআইজি এস পি বেইদ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আইএসআই রাজৌরি পুঞ্জ থেকে অনুপ্রবেশ শুরু করে। এবং কিছু মানুষ অনুপ্রবেশ করায়।তাদের মধ্যে পাকিস্তান থেকে আসা কিছু সেনার লোক আছে। সাথে জঙ্গলে লড়াই করতে খুব দক্ষ এমন এসএসজি কম্যান্ডো আছে।

ডিআইজি’র সাথে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছে। রউফ গনির মতে, যে সকল সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে শ্রমিকরা মারা গেছে, তারা সকলেই বিদেশি। তিনি আরও বলেন আমাদের কাছে অনুপ্রবেশ বাড়ার কোন তথ্য নেই। কিন্তু বর্তমানে যে সন্ত্রাসবাদীরা সক্রিয় হয়েছে তারা কেও দেশীয় নয়। বরং তারা পাকিস্তান থেকে এসেছে এরুপ মনে করা হচ্ছে।আর তাই অনুপ্রবেশ বেড়ে যাওয়ার কথা উঠছে।

সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ও একই কথা বলেছে ভিডাব্লিউকে। তিনি বলেন পাকিস্তানিদের নিজস্ব দেশের পরিস্থিতি যতই নাজুক হোক না কেন। তারা কাশ্মীরের নীতিতে কোন পরিবর্তন করেনি। বরং তারা কাশ্মীরে আরও বেশি করে অনুপ্রবেশ করিয়ে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম বাড়িয়েছে।

তার ধারণা মতে, পাকিস্তান ও তাদের নিজস্ব বিষয়াদি থেকে এই দেশের মানুষের দৃষ্টি অন্যত্র সরাতে চায়। আবার তারা কাশ্মীরে অস্থিরতা সৃষ্টি করে ভারতকে বিপাকে ফেলতে চাচ্ছে।

উর্দুর সাংবাদিক সালাউদ্দিন জৈন এর ভাষ্য অনুযায়ী সসন্ত্রাসীবাদীরা এটা দেখাতে  চাচ্ছে যে, লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে ঠিকই কিন্তু কাশ্মীর সমস্যার সমাধান এখনো হয়নি। কাশ্মীরের সমস্যা এখনো চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *