বাংলাদেশে শিক্ষার মানোন্নয়নে এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি কাঠামো সুষ্ঠুভাবে নির্ধারণের লক্ষ্যে নতুন নীতিমালা চালু করেছে সরকার। এই নীতিমালা শিক্ষা খাতে স্বচ্ছতা ও সুশৃঙ্খলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। নীতিমালা অনুযায়ী এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলোর জন্য টিউশন ফি ছাড়া অন্যান্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা মহানগর, জেলা সদর, পৌরসভা ও মফস্বল এলাকাভিত্তিক ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছে।
সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত স্কুলের বেতন ও টিউশন ফি নির্ধারণ করবে মহানগর কমিটি এবং জেলা সদর, পৌরসভা ও উপজেলা এলাকার জন্য এটি নির্ধারণ করবে জেলা কমিটি। কমিটিগুলোকে তাদের নির্ধারিত বেতন কাঠামো ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, মহানগরের (সিটি করপোরেশন এলাকা) এমপিওভুক্ত স্কুলগুলো ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ২৩টি খাতের জন্য বছরে সর্বমোট ২,৪৬৫ টাকা আদায় করতে পারবে। অন্যান্য খাতের মধ্যে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা, টিফিন, ম্যাগাজিন, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, জাতীয় দিবস উদ্যাপন, বিভিন্ন ক্লাব কার্যক্রম, আইসিটি ও ল্যাবরেটরি খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একইভাবে, জেলা সদর, পৌর এলাকা এবং উপজেলাগুলোর জন্য কিছুটা কম ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
কলেজ পর্যায়ে মহানগরের এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে ২৬টি খাতে সর্বমোট ৩,৬৬০ টাকা এবং নন-এমপিও কলেজগুলো ৪,৩৩০ টাকা পর্যন্ত আদায় করতে পারবে।
এই নীতিমালার মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি কাঠামো সুষ্ঠুভাবে নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর থেকে সংগৃহীত অর্থ একটি নির্দিষ্ট তফসিলি ব্যাংক হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংগৃহীত অর্থ খাতভিত্তিক খরচ করা বাধ্যতামূলক হবে এবং এক খাতের অর্থ অন্য খাতে খরচ করা যাবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ নীতিমালা কার্যকর করে অভিভাবকদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু শিক্ষা পরিবেশ তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এছাড়াও, নিয়মিত নজরদারির মাধ্যমে নীতিমালার বাস্তবায়ন সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা হবে। নীতিমালাটি কার্যকর হওয়ার ফলে দেশের শিক্ষা খাতে শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং সকলের জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ আরও সহজতর হবে বলে আশা করা যায়।