স্পেসএক্স শিগগিরই তাদের বৃহত্তম রকেট স্টারশিপের ষষ্ঠ পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে, যা ১৮ নভেম্বরের কাছাকাছি সময়ে হতে পারে। এই মিশনটি স্পেসএক্সের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কারণ এর আগে পরিচালিত পঞ্চম ফ্লাইটটি বড় সাফল্য অর্জন করেছে। ঐ মিশনে সফলভাবে উৎক্ষেপণ শেষে রকেটের ‘সুপার হেভি বুস্টার’ নিরাপদে লঞ্চ সাইটে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল এবং রকেটের ওপরের অংশটি অবতরণ করেছিল ভারত মহাসাগরে। এ ধরনের সাফল্য মহাকাশযান পুনর্ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশাল অগ্রগতি নির্দেশ করে, যা ভবিষ্যতে মহাকাশ ভ্রমণের খরচ কমাতে ও সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে।
স্পেসএক্সের এই ষষ্ঠ ফ্লাইট পরীক্ষার জন্য বেশ কিছু লক্ষ্য পূর্বেই পূরণ করা হয়েছে। এর ফলে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) থেকে এই ফ্লাইটের অনুমোদন পেতে অনেক কম সময় লেগেছে। অতীতে প্রতিটি স্টারশিপ উৎক্ষেপণের জন্য স্পেসএক্সকে প্রায়ই কয়েক মাস ধরে নিয়ন্ত্রকদের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হতো, কিন্তু এবার একই সাথে পঞ্চম ও ষষ্ঠ ফ্লাইটের অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও দ্রুততার সঙ্গে মিশন পরিচালনায় সহায়ক হবে।
স্পেসএক্স তাদের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করেছে যে, ষষ্ঠ ফ্লাইটের মাধ্যমে তারা পঞ্চম ফ্লাইটের সাফল্য পুনরায় অর্জনের চেষ্টা করবে। এতে রয়েছে উৎক্ষেপণের পর রকেটের বুস্টারকে লঞ্চ সাইটে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি রকেটের ওপরের অংশকে সঠিকভাবে অবতরণ করানোর পরিকল্পনা। এর মাধ্যমে তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সম্পূর্ণ সিস্টেমটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য হিসেবে তৈরি করা।
উপরন্তু, রকেটের ‘হিট শিল্ড’ এবং এর ওপরের অংশের গতিবিধি এবং অবতরণের বিভিন্ন পর্যায়ে পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়া হবে, যাতে রকেট ও বুস্টারের সামগ্রিক কার্যক্ষমতা বাড়ানো যায়। এ উদ্দেশ্যে স্পেসএক্স তাদের প্রকৌশল দলের মাধ্যমে বেশ কিছু উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে বুস্টারের প্রোপালশন সিস্টেমের অপ্রয়োজনীয় অংশ সরিয়ে ফেলা এবং এর সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার আপডেট।
কক্ষপথে রকেটের ছয়টি র্যাপ্টর ইঞ্জিনের একটি পুনরায় জ্বালানোর চেষ্টাও স্পেসএক্স করবে, যা স্টারশিপের ওপরের অংশকে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এই ধরনের প্রযুক্তিগত পরীক্ষা সফল হলে ভবিষ্যতে স্টারশিপের বারবার ব্যবহার সহজতর হবে এবং বৃহৎ ব্যয়ের মহাকাশ মিশনগুলোর খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
স্পেসএক্সের এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতের মহাকাশ ভ্রমণ এবং মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। স্টারশিপের পূর্ণাঙ্গ পুনর্ব্যবহারযোগ্য মডেলটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে, তা কেবল মহাকাশ ভ্রমণের খরচ কমাবে না, বরং মঙ্গল ও আরও দূরবর্তী গ্রহে মানুষের বসতি স্থাপনের পথেও সহায়ক হতে পারে।