বিদায় নিলেন টেনিস সম্রাট নাদাল

স্প্যানিশ লন টেনিস কোর্টের এক সম্রাট নাদাল। ইউরোপের অন্য জাতিগুলোর অ্যাথলেটদের মতো ক্ষ্যাপাটে নন তিনি। কিন্তু কোর্টে প্রতিপক্ষের অবচেতন মন তার নাম শুনলেই যেন নড়েচড়ে বসতো। স্প্যানিশ টেনিস কিংবদন্তি রাফায়েল নাদাল। দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময়ের বর্নাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন তিনি।

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ডেভিস কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের বিদায়ে ২২ গ্র্যান্ড স্লামের মালিকও শেষ দেখে ফেললেন। নাদালও শেষটা রাঙাতে পারেননি। সিঙ্গেলসে ৬-৪, ৬-৪ গেমে হেরেছেন নেদারল্যান্ডসের বোতিচ ফন দে জান্ডশুল্ফের কাছে।

উইম্বলডন থেকে ফ্রেঞ্চ কিংবা ইউএস ওপেন- যেখানেই গিয়েছেন আলো ছড়িয়েছেন তিনি। তবে সবকিছুরই যেন শেষ আছে। পশ্চিম আকাশের গোধূলিরাঙা রক্তিম সূর্যের মতোই সমস্ত দ্যুতি নিয়ে একসময় যেন থামতে হয়। অবশেষে থামলেন নাদাল। অশ্রুসিক্ত বিদায়ের ক্ষণে কাঁদলেন নিজে, কাঁদালেন ভক্তদের। আগের ঘোষণা অনুযায়ী ডেভিস কাপেই শেষ হলো তার পেশাদার ক্যারিয়ার।

বিদায়ের ক্ষণে চোখে জল রাফায়েল নাদালের। কিছুতেই কান্না চেপে রাখতে পারেননি স্প্যানিশ কিংবদন্তি। সুদীর্ঘ ২৩ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের শেষবেলায় নাদাল শুধু বললেন, আমার পদক, সাফল্য, সেসব তো রইলোই। শুধু চাই, লোকে আমাকে মায়োর্কার এক ছোট্ট গ্রাম থেকে উঠে আসা ভালো মানুষ হিসেবে মনে রাখুক।

তবে শেষটা এরকম হোক তা চাননি কেউ। ডেভিস কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই ছিটকে গেল স্পেন। ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে হারের পরই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ক্লে কোর্টের নায়ক।

শেষ আট এককের অন্য ম্যাচে অবশ্য জয় পান তার সতীর্থ কার্লোস আলকারাজ। এরপর ভক্ত-সমর্থকদের নজর ছিল ডাবলসে। কিন্তু সেই ডাবলসে আলকারাজ ও মারসেন গ্রানোয়ার্স নেদারল্যান্ডসের জুটির কাছে হেরে যান। তাতেই কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় স্পেনের।

শেষ ম্যাচের আগে নাদালকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন রজার ফেদেরার। ম্যাচের শুরু থেকেই আবেগপ্রবণ ছিলেন নাদাল। সেই কারণেই হয়তো খেলায় কয়েকটি ভুল তিনি করে ফেলেন, যা সচরাচর ২২টি গ্রান্ড স্ল্যামের মালিকের কাছ থেকে দেখা যায় না। সেই সুযোগ কাজে লাগান বটিক। আক্রমণাত্মক খেলে নাদালকে চাপে রাখেন তিনি। সেই চাপ কাটিয়ে উঠতে পারেননি নাদাল।

মালাগায় নাদালের শেষের শুরু দেখার জন্য নেমেছিল দর্শকের ঢল। তবে স্পেন ২-১ ব্যবধানে হারের পর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে নিজের অবসর নিয়ে অশ্রুভেজা চোখে তিনি বলেছেন, আমি মনে শান্তি নিয়েই যাচ্ছি। রেখে যাচ্ছি উত্তরাধিকার। যেটাকে আমি মনে করি, শুধু খেলাধুলার ক্ষেত্রে নয়, ব্যক্তিগতও। আমি জানি, যে ভালোবাসা আমি পেয়েছি, সেটা যদি শুধু কোর্টে যা করেছি তার জন্য হতো তবে সেটা একই হতো নাদাল।
তখন নাদাল তার অনবদ্য ক্যারিয়ারের পেছনে অবদানের জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন যারা তাকে সাহায্য করেছেন তাদের। তার মধ্যে আছেন তার চাচা টনি নাদালও। নাদালের লম্বা ক্যারিয়ারের পেছনে টনি নাদালেও রয়েছে বড় ভূমিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *