শিশু লালন-পালনের সেরা পাঁচ দেশ

 

অনেক পরিবার তাদের সন্তানের জন্য আরও ভালো ভবিষ্যৎ গড়তে নিজ দেশ ছেড়ে বিদেশে বসবাসের কথা ভাবেন। তবে প্রশ্ন থেকে যায়—কোন দেশটি হবে সন্তান লালন-পালনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী?

বিশ্বের শান্তিপূর্ণ ও বসবাসযোগ্য দেশগুলোর তালিকা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হতে পারে। তবে এসব তালিকা আর্থিক স্থিতিশীলতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় শিশুদের স্বাস্থ্য, মানসিক প্রশান্তি, শিক্ষার মান এবং পরিবেশবান্ধব সুযোগ-সুবিধাগুলোর ওপর।

বিশ্বব্যাপী শিশুর সুস্থতার মান বিবেচনায় ইউনিসেফ তৈরি করেছে ‘শিশুদের সুস্থতার প্রতিবেদন’।  কিছু দেশের সাফল্য তুলে ধরা হলো।


১. জাপান

শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে জাপান শীর্ষে।

  • শারীরিক স্বাস্থ্য: শিশুমৃত্যু ও স্থূলতার হার বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন।
  • নিরাপত্তা: ট্রাফিক দুর্ঘটনা ও অপরাধের হার খুবই কম।
  • শিক্ষা: বিশ্বের অন্যতম সেরা শিক্ষা ব্যবস্থা।
  • পরিবারবান্ধব নীতি: কর্মজীবী বাবা-মায়ের জন্য বেতনসহ ছুটির সুবিধা।
    জাপানে শিশুদের স্বাধীনভাবে হাঁটা বা ট্রেনে চড়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার, যা পরিবারের জন্য একটি বড় সুবিধা।

২. এস্তোনিয়া

এস্তোনিয়া কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এগিয়ে।

  • পরিবেশ: শিশুদের জন্য সবুজ খেলার মাঠ ও কম দূষণ।
  • শিক্ষা: গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষায় বিশেষ মনোযোগ, যা শিশুদের দক্ষ করে তোলে।
  • পারিবারিক ছুটি: বাবা-মা মিলে ৪৭৫ দিনের বেতনসহ ছুটির সুযোগ।

এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা গেম-ভিত্তিক পদ্ধতিতে পরিচালিত, যা শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নে সহায়তা করে।


৩. স্পেন

শিশুদের মানসিক সুস্থতা ও পরিবেশবান্ধব জীবনযাত্রার জন্য স্পেন পরিচিত।

  • পরিবেশ: বায়ু ও পানি দূষণের হার কম।
  • মানসিক স্বাস্থ্য: শিশুরা সহজেই বন্ধুত্ব গড়তে সক্ষম।
  • পারিবারিক সংস্কৃতি: শিশুকে নিয়ে রেস্তোরাঁ বা পার্কে যাওয়া সাধারণ ব্যাপার।
    স্পেনে বাবা-মা উভয়ই শতভাগ বেতনসহ ১৬ সপ্তাহের ছুটি পান।

৪. ফিনল্যান্ড

ফিনল্যান্ড শিশুদের জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ।

  • প্রাকৃতিক সম্পদ: ৭০% বনভূমি, যা মানসিক চাপ কমায়।
  • শিক্ষা: শিক্ষার মান বিশ্বের সেরা।
  • ছুটি: মা-বাবা ১৪ মাস পর্যন্ত বেতনসহ ছুটি পান।
    ফিনল্যান্ডের শিশুরা স্কুলের কাজ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ জীবন কাটায়।

৫. নেদারল্যান্ডস

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেদারল্যান্ডস শীর্ষে।

  • মানসিক প্রশান্তি: ১৫ বছর বয়সী শিশুরা তাদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট।
  • সামাজিক দক্ষতা: দলগত কার্যক্রমে অভ্যস্ত।
  • পরিবারবান্ধব নীতি: বাবা-মায়ের জন্য পর্যাপ্ত ছুটির সুবিধা।
    এখানে শিশুদের ‘নরমাল’ থাকার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়, যা তাদের চাপমুক্ত শৈশব নিশ্চিত করে।

শিশুদের সুস্থ ও সুখী শৈশবের জন্য এসব দেশ পরিবারের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। তবে প্রবাস জীবনের অন্যান্য চ্যালেঞ্জও মাথায় রাখা জরুরি।

সূত্র:বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *