মেলবোর্ন টেস্টের চতুর্থ দিন, ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রথম ইনিংসের ১১৯তম ওভারেই ঘটে যায় বিতর্কিত এক ঘটনা। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বলে মোহাম্মদ সিরাজের ব্যাট থেকে বল সোজা স্লিপে থাকা স্টিভ স্মিথের হাতে যায় বলে দাবি করেন কামিন্স। তবে মাঠের আম্পায়ার মাইকেল গফ নিশ্চিত হতে না পেরে সিদ্ধান্ত নিতে তৃতীয় আম্পায়ারের সহায়তা নেন।
বাংলাদেশের শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ, যিনি মেলবোর্ন টেস্টে তৃতীয় আম্পায়ারের দায়িত্বে ছিলেন, রিপ্লে দেখে বল মাটিতে লেগেছে বলে ‘নটআউট’ ঘোষণা করেন। তবে তাঁর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্যাট কামিন্সসহ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা।
রিপ্লে দেখার পর শরফুদ্দৌলা মাত্র দুবার বলের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করে দ্রুতই নটআউট ঘোষণা দেন। সিরাজের ব্যাট থেকে বল সরাসরি স্মিথের হাতে গেছে কি না, নাকি মাটিতে ড্রপ করেছে, তা নিয়ে নিশ্চিত হতে আম্পায়ার আরও সময় নিতে পারতেন বলে মনে করছেন অনেকেই। ধারাভাষ্যকক্ষে এ নিয়ে গুঞ্জন ওঠে।
অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি উইকেটরক্ষক ব্যাটার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি আগে কখনো দেখিনি। রিপ্লে দেখে আরও সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।’ তাঁর সঙ্গে একমত হয়ে ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রীও মন্তব্য করেন, ‘তৃতীয় আম্পায়ার খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মাত্র দুবার রিপ্লে দেখে এমন স্পর্শকাতর ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেওয়া আসলেই প্রশ্নবিদ্ধ।’
শরফুদ্দৌলার দেওয়া নটআউট সিদ্ধান্তে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক কামিন্স নতুন করে রিভিউ নেওয়ার আবেদন করেন। তবে মাঠের দুই আম্পায়ার মাইকেল গফ ও জোয়েল উইলসন তাঁর আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। একই সিদ্ধান্তে দুবার রিভিউ চাওয়ার সুযোগ নেই বলে তাঁরা জানালেও, বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যায়।
তবে এই বিতর্কে খুব বেশি সময় ক্ষোভে থাকতে হয়নি অস্ট্রেলিয়ানদের। মাত্র তিন বল পরই নাথান লায়নের বলে ভারতের শেষ ব্যাটসম্যান নীতীশ কুমার আউট হলে ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। ভারতীয় দল প্রথম ইনিংসে ২৯৮ রানে অলআউট হয়।
ক্রিকেট মাঠে এমন বিতর্কিত ঘটনা প্রায়শই ঘটে, যা দর্শকদের মাঝে উত্তেজনা তৈরি করে। তবে সঠিক প্রযুক্তি এবং সময় নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুরুত্ব নিয়ে এ ম্যাচ আবারও প্রশ্ন তুলে দিল। মেলবোর্ন টেস্টের এই ঘটনা ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে দীর্ঘদিন গেঁথে থাকবে।