দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে সিউলের একটি আদালত। সামরিক আইন জারি করার চেষ্টার অভিযোগে ৩ ডিসেম্বর বরখাস্ত হওয়া ইউনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্রদ্রোহের একাধিক অভিযোগে তদন্ত চলছে। গত দুই সপ্তাহে তিনি তিনটি সমন উপেক্ষা করেছেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
রোববার রাতে, তদন্তকারীরা বিদ্রোহ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। ইউনের আইনজীবীরা এ পদক্ষেপকে ‘অবৈধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, এবং ইউন ও তার একজন উত্তরসূরিকে পার্লামেন্টে অভিশংসিত করা হয়েছে।
ইউন হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট, যার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলো। আদালতের পরোয়ানার ভিত্তিতে, তদন্তকারীরা তাকে ৪৮ ঘণ্টা হেফাজতে রাখতে পারবেন। তবে ইউনের নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের প্রতিরোধের কারণে পরোয়ানাটি কার্যকর করা সম্ভব হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। এর আগে, প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা পরিষেবা কর্মকর্তারা তদন্তকারীদের প্রেসিডেন্টের অফিস ও বাসভবনে প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছিলেন।
ইউনের আইনজীবীরা বলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার ক্ষমতা নেই, কারণ সামরিক আইন ঘোষণা করা তার সাংবিধানিক অধিকার। তিনি আরও বলেন, আইনি উদ্বেগের কারণে ইউন পূর্বে তিনটি সমন উপেক্ষা করেছেন।
ইউনের বর্তমান অবস্থান জানা যায়নি, তবে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর, পার্লামেন্টে অভিশংসন ভোটের পর তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত হন। তবে, সাংবিধানিক আদালত যদি তার অভিশংসন বহাল রাখে, তবেই তিনি পদচ্যুত হবেন।
বর্তমানে, সাংবিধানিক আদালতের ৯ সদস্যের বেঞ্চে ছয়জন বিচারপতি রয়েছেন, যার মানে একজন বিচারপতি অভিশংসন প্রত্যাখ্যান করলেও ইউনকে অপসারণ করা সম্ভব হবে না। বিরোধীরা আশা করেছিলেন, আরও তিনজন বিচারকের মনোনয়ন দিলে অভিশংসনের সম্ভাবনা বাড়বে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু গত সপ্তাহে তাদের প্রস্তাব ভেটো করেছেন।
এ পরিস্থিতিতে বিরোধীরা হানকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং তারা অর্থমন্ত্রী চোই সাং-মোককেও একইভাবে হুমকি দিচ্ছেন, যিনি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ও ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী উভয় পদে রয়েছেন।
ঠিকানা/এসআর