নেত্রকোনায় এসআইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা, তিনি ছুটিতে বাড়িতে এসেছিল

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহতের নাম মো. শফিকুল ইসলাম (৪৮)। আজ বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাত প্রায় পৌনে ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে দুর্গাপুর পৌর শহরের পানমহাল রোডে এ হামলা চালানো হয়।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে এই হামলা হতে পারে। নিহত শফিকুল ইসলাম দুর্গাপুর উপজেলার চণ্ডীগড় ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি জামালপুর পুলিশ লাইনসে বেতার বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) পদে কর্মরত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র, পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের তথ্য অনুযায়ী, শফিকুল ইসলাম গতকাল বুধবার ছুটিতে বাড়ি ফিরেছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি দুর্গাপুর পৌর এলাকার বাগিচাপাড়া থেকে বাজারের দিকে রওনা হন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে পানমহাল রোডে পৌঁছালে তিন-চারজন দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি কোপানোর ফলে তার বাঁ পা গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে গভীর জখম হয়।

এলাকাবাসী চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর রাত প্রায় পৌনে ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

পানমহাল রোডের এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তিনি সন্ধ্যায় চিৎকার শুনে বাইরে আসেন এবং কয়েকজনকে একজনের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাতে দেখেন। অন্ধকার ও পর্যাপ্ত সড়কবাতি না থাকায় কাউকে চেনা যায়নি। হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন আহত পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে।

শফিকুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার জানান, ‘কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা বুঝতে পারছি না। আমি আমার স্বামীর হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

নিহতের ছেলে, ১৪ বছর বয়সী রাফিউল ইসলাম জানায়, শুক্রবার পরিবারসহ ময়মনসিংহে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। বাজারে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে গিয়ে তার বাবা দুর্বৃত্তদের হামলায় প্রাণ হারান।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণেই এই হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করা হচ্ছে এবং দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *