যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দশজন। স্থানীয় কর্মকর্তারা গতকাল বুধবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আগুনের তীব্রতায় পুড়ে গেছে হাজার হাজার বাড়ি এবং আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ।
দ্রুতগতির এই দাবানল নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা। শহরের উপকণ্ঠে বাতাসের প্রবল গতি আগুনকে আরও ধ্বংসাত্মক করে তুলছে। প্যাসিফিক প্যালিসেডস নামক অভিজাত এলাকাটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের প্রধান অ্যান্থনি মেরন বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, তবে এটি একটি অসম লড়াই। পুরো কাউন্টির অগ্নিনির্বাপণ বিভাগ একত্রিত হলেও দাবানলের ভয়াবহতা সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।”
এ পর্যন্ত প্যাসিফিক প্যালিসেডসে প্রায় ১৬ হাজার একর জমি এবং এক হাজারের বেশি বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আগুনে ধ্বংস হয়েছে। অন্যদিকে, শহরের উত্তরে আলতাদেনা এলাকায় আরেকটি দাবানল প্রায় ১০ হাজার ৬০০ একর জমি গ্রাস করেছে। সেখানেও সড়কসহ শহরতলির অনেক জায়গায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির শেরিফ রবার্ট লুনা জানিয়েছেন, প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে। দাবানলের ওপর আমাদের এখনো কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আমরা আশা করছি, পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে না, তবে বাস্তবতা ভিন্ন হতে পারে।”
গত মঙ্গলবার সকালে লস অ্যাঞ্জেলেসের আশপাশে একাধিক জায়গায় দাবানল শুরু হয়। বাতাসের প্রবল গতি এবং শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আগুন দ্রুত বিস্তৃত হয়। এতে হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
প্যাসিফিক প্যালিসেডস এবং আলতাদেনা এলাকাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের মূল্যবান সম্পদ ফেলে রেখে প্রাণ বাঁচাতে ছুটছেন। দমকল বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা চালালেও দাবানলের গতি থামাতে পারছে না।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে জরুরি সেবা বিভাগগুলো একযোগে কাজ করছে। তবে দাবানলের বিরুদ্ধে এই লড়াই কতটা সফল হবে, তা এখনো অনিশ্চিত।