সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ হবে কাউন্সিলের মাধ্যমে, অধ্যাদেশ জারি

 

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া এখন থেকে একটি স্বতন্ত্র কাউন্সিলের মাধ্যমে হবে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে, একই দিন সচিবালয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ এবং সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

তিনি জানান, গত ১৭ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয়। আইন উপদেষ্টা বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে উচ্চ আদালতে নানা অনাচার ঘটেছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে এবং মানুষ সেখানে ন্যায়বিচার পায়নি। এর কারণ ছিল, সরকারগুলোর দলীয় বিবেচনায় বিচারক নিয়োগ। উচ্চ আদালতে নিরপেক্ষ ও যোগ্য বিচারক না থাকলে ১৮ কোটি মানুষের মানবাধিকার সঠিকভাবে রক্ষা করা সম্ভব ছিল না।”

ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, “বছরব্যাপী, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এই দাবি উঠেছে যে, উচ্চ আদালতে দক্ষ, অভিজ্ঞ, নিরপেক্ষ এবং যোগ্য বিচারক নিয়োগ দেওয়া হোক।” তিনি জানান, নতুন আইনের খসড়া তৈরির জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির অফিস এবং বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সহায়তায় একটি পরামর্শক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠন করা হবে, যা প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে হবে। এই কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দুই বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগের দুই বিচারক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল দায়িত্ব পালন করবেন।

কাউন্সিল প্রথমে প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই করবে এবং স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থীদের নাম সংগ্রহ করবে। এ প্রক্রিয়াটি হবে উন্মুক্ত, অর্থাৎ, যে কোনো ব্যক্তি বা আইনজীবী কাউকে বিচারপতি হিসেবে প্রস্তাব দিতে পারবেন। কাউন্সিল প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের পর ইন্টারভিউ গ্রহণ করবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “এই প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক হবে। আমরা আশা করছি, উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এবং আগামী তিন মাসের মধ্যে হাইকোর্টে পরবর্তী বিচারক নিয়োগ একটি উন্নত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারক নিয়োগ বিচারকদের সার্ভিস এবং আইনজীবীদের মধ্য থেকে করা হয়। নতুন আইন অনুযায়ী, বিচারক নিয়োগে কোনো অনুপাত নির্ধারণ করা হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেবে। তবে, যথোপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে।”

ইত্তেফাক/জেডএইচডি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *