এই মামলায় ডেমোক্র্যাট–নিয়ন্ত্রিত ২২টি অঙ্গরাজ্য এবং ২টি শহরের কর্তৃপক্ষ যুক্ত হয়েছে, এবং নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলোও এতে অংশ নিয়েছে।
ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর, অভিষেক ভাষণে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি অবৈধ অভিবাসীদের “অপরাধী” হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ করা অভিবাসীদের বহিষ্কার করা হবে। তাঁর এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার বোস্টনের ফেডারেল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন ২২টি অঙ্গরাজ্য, ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া এবং সান ফ্রান্সিসকো শহর কর্তৃপক্ষ। মামলায় দাবি করা হয়েছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মার্কিন সংবিধানের গুরুতর লঙ্ঘন।
মামলাটির যুক্তিতে বলা হয়, যদিও প্রেসিডেন্টের অভিবাসন নীতি প্রণয়নের ক্ষমতা রয়েছে, নাগরিকত্বের অধিকার কেড়ে নেওয়ার নির্দেশ তাঁর আইনি এখতিয়ারবহির্ভূত। এর আগে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন এবং কয়েকটি অভিবাসী সংগঠনও এই বিষয়ে মামলা করেছিলেন।
নিউ জার্সির অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাথিউ প্ল্যাটকিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ট্রাম্পের অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা আইনি পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। এই মামলা ট্রাম্প প্রশাসনকে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে আমরা আমাদের অধিবাসী এবং তাঁদের সাংবিধানিক অধিকারের পক্ষে দাঁড়াব।”
এই মামলাগুলোর বেশিরভাগই ম্যাসাচুসেটসের বোস্টন বা নিউ হ্যাম্পশায়ারের কনকর্ডে দায়ের হয়েছে। ট্রাম্প এই নির্বাহী আদেশে নির্দেশ দিয়েছেন, কোনো অবৈধ অভিবাসী বা সাময়িক ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকলে, সেই অভিবাসী যাদের সন্তান জন্ম নেবে, তাদেরকে নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে না।
এ বিষয়ে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন জানিয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া শিশুকে নাগরিকত্ব না দেওয়ার আদেশ শুধু অসাংবিধানিক নয়, বরং এটি মার্কিন মূল্যবোধের বিপরীতে।” এদিকে, আরও কিছু ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাট–নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্যগুলো ও অন্যান্য সংগঠন মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ম্যাসাচুসেটস ও নিউ হ্যাম্পশায়ারের আদালতের সিদ্ধান্ত যদি ফার্স্ট সার্কিট কোর্ট অব আপিল পর্যালোচনা করে, তবে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ আইনি লড়াই হতে পারে, কারণ এই আদালতের বিচারকেরা সবাই ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত।
ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের উদ্যোগ কীভাবে কার্যকর করা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়, কারণ এটি সংবিধানে নির্ধারিত একটি বিষয়। এই পরিবর্তন করতে হলে কংগ্রেসের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন।
সূত্রঃ প্রথম আলো