মুসলিমপ্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ফের নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা?

 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত ২০ জানুয়ারি শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে দিনেই ট্রাম্প শতাধিক নির্বাহী আদেশে সই করে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছেন। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের একটি স্বাক্ষরিত নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে মুসলিমপ্রধান বা আরব দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশটির নাগরিক অধিকার গোষ্ঠীগুলোর দাবি, ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত এই আদেশে এমন শঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে।

এডিসি (আমেরিকান-আরব অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন কমিটি) জানিয়েছে, ২০১৭ সালে ট্রাম্প একাধিক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন, এবং তা ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য যে আইন ও বিধি অনুসরণ করা হয়েছিল, তা সামনে রেখে নতুন আদেশটি দেওয়া হয়েছে। এই নতুন আদেশের মাধ্যমে ভিসা-সংক্রান্ত আবেদন প্রত্যাখ্যান এবং যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের অপসারণের সুযোগ আরও বিস্তৃত হবে। এডিসি ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করতে একটি ২৪ ঘণ্টার হটলাইন চালু করেছে।

অন্যদিকে, দ্য ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিল (এনআইএসি) জানিয়েছে, ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশি সন্ত্রাসী, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননিরাপত্তা হুমকি থেকে সুরক্ষিত রাখার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। এনআইএসি বলছে, এই আদেশটি যুক্তরাষ্ট্রের পরিবারগুলোকে প্রিয়জন থেকে বিচ্ছিন্ন করবে এবং দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির হার কমে যাবে। তাদের পক্ষ থেকে একটি নতুন ওয়েবসাইটও চালু করা হয়েছে।

২০১৭ সালে প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। তবে নতুন আদেশটি আরও ব্যাপক এবং এতে বলা হয়েছে, যেসব ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, সংস্কৃতি, সরকার, প্রতিষ্ঠান বা নীতির প্রতি শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করবেন, তাদের ভিসা বা প্রবেশাধিকার বাতিল করা হবে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই নতুন আদেশটি এমন এক প্রক্রিয়ার সূচনা করতে পারে, যার ফলে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে দেওয়া ভিসাগুলো বাতিল করা হতে পারে।

তবে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ নিয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে হোয়াইট হাউসকে বারবার প্রশ্ন করা হলেও, কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

আগের নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। তিনি ফিলিস্তিনের গাজা, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া এবং ইয়েমেনের মতো দেশগুলোর নাম উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি বলেছিলেন, সাম্যবাদী, মার্ক্সবাদী এবং সমাজতান্ত্রিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

— ইত্তেফাক/এসআর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *