আমরা কম বেশি সবাই নিপাহ ভাইরাসের নাম শুনেছি। NiV যা নিপাহ ভাইরাস নামে পরিচিত। এটি (প্রাণী থেকে মানুষ) একটি জুনোটিক ভাইরাস যা সরাসরি মানুষের মধ্যে দূষিত খাবারের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে।
জানা যায়, নিপাহ ভাইরাস মানুষকে এবং শূকরকে সংক্রমিত করে।
মানুষের সংস্পর্শে যদি সংক্রামিত প্রাণীটি বা তার শরীরের তরল (প্রস্রাব বা লালা) আসে, তাহলেই সাধারণত সংক্রমন হয়ে থাকে। NIV একবার কার দেহে সংক্রমিত হলে একজন থেকে অন্য ব্যক্তিতেও সংক্রমণ করতে পারে। এনআইভি দেহে সংক্রমণ হলে এনসেফালাইটিস, বা মস্তিষ্কের ফুলে যায়। এটি গুরুতর বা মৃদু অসুস্থতার কারণ হতে পারে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে কখনও কখনও।
কিছু লক্ষন “নিপাহ ভাইরাস” সংক্রমণের
নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষন গুলো সাধারণত দেখা যা ভাইরাসটির সংস্পর্শের ৪-১৪ দিনের মাঝে। প্রথমে ৩-৪ দিনের মাঝে মাথা ব্যাথা ও জ্বর দিয়ে শুরু হয়। তবে সাধারণ লক্ষন গুলোর মাঝে রয়েছে – গলা ব্যাথা, কাশি, নিশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
“নিপাহ ভাইরাস”সংক্রমনের প্রাথমিক লক্ষন:
- মাথা ব্যাথা
- জ্বর
- কাশি
- বমি
- শ্বাসকষ্ট
- অতিরিক্ত দূর্বলতা
- স্বরভঙ্গি
- পেশী ব্যাথা
“নিপাহ ভাইরাস” সংক্রমণের মারাত্মক কিছু লক্ষন:
- মস্তিষ্ক ফুলে যাওয়া
- হৃদযন্ত্রে আক্রমণ
- বিভ্রান্তি বা তন্দ্রা
- মোহা
নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ৪০-৭৫% ক্ষেত্রে মৃত্যু হয়।
কখন ডাক্তার দেখানো জরুরি
আপনি যদি উপরোক্ত লক্ষন গুলো আপনার বা পরিবারের কারো মাঝে দেখতে পান তবে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমনের ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই নিপাহ ভাইরাস নিয়ে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
“নিপাহ ভাইরাসের” কারনে কি কি জটিলতা হতে পারে!
- মস্তিষ্কের প্রদাহ
- শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা
- খিঁচুনি
- স্নায়ুবিক জটিলতা
- গুরুতর মানসিক আঘাত
- বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যু
কিভাবে মেডিক্যালি “নিপাহ ভাইরাস” নির্ণয় করা হয়
- SWABS বা গলার পরিক্ষা
- CSF
- রক্তের নমুনা
- প্রসাবের নমুনা
“নিপাহ ভাইরাস” সংক্রমিত হলে চিকিৎসা
নির্দিষ্টভাবে নিপাহ ভাইরাসের চিকিৎসার কোনো টিকা বা ওষুধ এখনো আবিস্কৃত হয় নি। এর একমাত্র চিকিৎসা হচ্ছে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, যত্ন এবং হাইড্রেশন। তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি কিছু গুরুতর লক্ষন দেখা দিলে।
নিপাহ ভাইরাস একটি মারাত্মক সংক্রমিত ভাইরাস। এ ভাইরাস সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে। আসছে শীতকাল, এ সময় বাংলাদেশে বাদুড়ের সংস্পর্শ আসা খেজুরের রস ও অন্যান্য গাছের ফল ও রসের মাধ্যমে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। তাই সকলের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।