১১১পৃথিবীতে রহস্যময় এমন অনেক স্থান রয়েছে যেগুলির রহস্য ভেদ বিজ্ঞানীরাও করতে পারেননি। এমনই জাপান এর ফুজি পর্বতমালার উত্তর-পশ্চিমে রহস্যময় এক বন অবস্থিত তার নাম অওকিগাহারা। এই বনটির অন্য নাম ‘সুইসাইডাল ফরেস্ট’ বা ‘আত্মহত্যার অরণ্য’। এর ভৌতিক গল্প বিশ্ব বিখ্যাত। বিশ্বে আত্মহত্যায় তৃতীয় স্থান হিসেবে বিখ্যাত বলে বিবেচনা করা হয়েছে এই বনকে এক নম্বরে রয়েছে গোল্ডেন গেট।
অওকিগাহারার আয়তন প্রায় পঁয়ত্রিশ বর্গ কিলোমিটার। এখানে গাছের ঘনত্ব এতই বেশি যে গাছের সমুদ্র বা ‘সি অব ট্রিজ্’ নামে ডাকা হয়। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকের কাছে নিরিবিলি হওয়াতে এটি খুব প্রিয় ডেস্টিনেশন। তবে এই বনে আত্মহত্যা করেছেন এমন মানুষের সংখ্যাও অনেক। সমীক্ষায় বলছে, এই অরণ্যে প্রতি বছর প্রায় শতাধিক জাপানি আত্মহত্যা করেন।
এই বনের দূরত্ব জাপানের টোকিও থেকে দুই ঘণ্টারও কম। আত্মহত্যার প্রবণতা অওকিগাহারা জঙ্গলে শুরু হয় ১৯৫০ সাল থেকে। ২০০২ সালে এই জঙ্গল থেকে ৭৮ টি মৃতদেহ উদ্ধার হযেছিল । সংখ্যাটা ১০০ ছাড়িয়ে যায় ২০০৩ সালে। ২০০৪ সালেও এই জঙ্গলে আত্মহত্যা করেছে শতাধিক। মৃতের সংখ্যা বেড়েছে দিন দিন।
জাপান সরকার পরবর্তী সময় আত্মহত্যার হার প্রকাশ বন্ধ করে দেয়। প্রধানত মাদকগ্রহণ বাগাতে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যার প্রবণতা এই জঙ্গলে বেশি। এই বনে কেউ হারিয়ে গেলে বেঁচে ফেরা তার মুশকিল। এই জঙ্গলে প্রবেশ একবার করলে মনে হয় ভুলভুলাইয়ায় নাকি ঢুকে গেছেন জাপানবাসীদের মতে।
সাইকো মাটসুমোটো নামক জাপানি এক লেখক ‘টাওয়ার অব ওয়েবস্’ নামে ১টি উপন্যাস লিখেছেন। এরপর থেকেই আত্মাহত্যাপ্রবণতা বাড়ে ওই বনে। কেননা উপন্যাসের দুটি চরিত্র আত্মহত্যা করেন এই বনে গিয়েই।
অদ্ভূত বিষয় হচ্ছে নিজেদের সুবিধার জন্য পর্যটকরা পথনির্দেশিকা লাগালেও সেগুলোকে প্রতিবার খুলে ফেলে জাপান সরকারের কর্মীরা। তাদের যুক্তি হলো এইসব পথনির্দেশিকা মানুষদের জঙ্গলে ঢুকতে আত্মহত্যাপ্রবণ হতে উৎসাহ দেয়।
এই বনের বয়স তিনশ বছর এর বেশি। জঙ্গলে প্রবেশ করলে কম্পাস, মোবাইল ফোনসহ সবকিছুর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। জঙ্গলের আশপাশের নানা ধরনের শব্দ রাতে লোকজন শুনতে পান এমনকি চিৎকারও।