সপ্তাহখানেক আগে বাবার মৃত্যুর পর, আত্মীয়স্বজনেরা হুসাইন ব্যাপারীকে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা উপহার দেন। সেই রিকশা চালিয়েই মা-ছেলের জীবনযাপন চলছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে হুসাইন রিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরেনি।
আজ শুক্রবার সকালে ফরিদপুর শহরের ভাটি লক্ষ্মীপুরের একটি মহিলা মাদ্রাসার সীমানাপ্রাচীরের পাশে হুসাইনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। রিকশাটি সেখানে ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দারা লাশটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে কোতোয়ালি থানার পুলিশ এবং সিআইডির ক্রাইম সিন টিম মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
হুসাইনের বাড়ি ফরিদপুর শহরের চর টেপাখোলা ব্যাপারীপাড়া মহল্লায়। তার বাবা খোকা ব্যাপারী মারা গেছেন এবং মা শেফালী বেগম (৪৮) জীবিত। এক সপ্তাহ আগে, ২৭ ডিসেম্বর, খোকা ব্যাপারীর মৃত্যু হয়।
হুসাইনের চাচাতো ভাই ওবায়দুর রহমান (৩৫) জানান, হুসাইন ছিল তার পরিবারের সবার ছোট। বোনেরা বিয়ে করে চলে গেছে। বাবার মৃত্যুর পর, উপার্জনের একমাত্র উৎস হিসেবে আত্মীয়রা হুসাইনকে একটি নতুন রিকশা দেন, যা চালিয়ে মা-ছেলের সংসার চলত। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে হুসাইনের মৃত্যুর পর শেফালী বেগম এখন কিভাবে বাঁচবেন, তা নিয়ে চিন্তা করছেন সবাই।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হুসাইন বৃহস্পতিবার বিকেলে রিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে সে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। রাতে তাকে না পেয়ে মাইকিংও করা হয়। পরদিন সকালে হুসাইনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, রিকশা ছিনতাইয়ের জন্য তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় পুরো এলাকা শোকাহত এবং চুপচাপ।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সনাতন কুমার মন্ডল বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য তা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ এবং সিআইডির ক্রাইম সিন টিম হত্যার তদন্ত করছে। শীঘ্রই অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদী।