নওগাঁয় সূর্যের দেখা নেই, বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা

 

মাঘের শুরুতে তীব্র শীত অনুভূত না হলেও গত কয়েকদিনে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। গত দুই দিন ধরে নওগাঁয় সূর্যের দেখা মেলেনি, এবং সকালে বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে। কুয়াশায় ভিজে গেছে রাস্তাঘাট, এবং দিনভর কনকনে ঠান্ডা ও হিমেল বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) নওগাঁয় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নওগাঁয় তৃতীয়বারের মতো মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। গত পাঁচদিন থেকে শীতের তীব্রতায় জনজীবন কষ্টে রয়েছে। বিশেষ করে গত দুই দিন ধরে কুয়াশার আড়ালে সূর্য ঢাকা পড়েছে। সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকছে, এবং বেলা বাড়লেও কুয়াশা কিছুটা কমলেও রাতে ও সকালে গুঁড়ি গুঁড়ি কুয়াশা ঝরছে। শীতের এই পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের মানুষরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

এদিকে, শীতের মধ্যে কাজের তাগিদে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। নওগাঁ সদর উপজেলার পার-নওগাঁ এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, “গতকাল থেকে মেঘ আর কুয়াশায় সূর্য দেখা যাচ্ছে না, কাজ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। ঠান্ডা বাতাসে হাত-পা অবশ হয়ে যায়।”

কাঁঠালতলী মোড় এলাকার কৃষক ইদ্রিস আলী বলেন, “হঠাৎ প্রচুর ঠান্ডা পড়েছে, সূর্য তো একদমই দেখা যাচ্ছে না। ধান রোপণের সময় হলেও জমির পানি জমে বরফ হয়ে গেছে, তাই ঠিক মতো ধান রোপণ করতে পারছি না।”

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, চলতি বছরে নওগাঁয় ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ সম্পন্ন হয়েছে। তবে কুয়াশা ও শীতের কারণে আলু, সরিষাসহ অন্যান্য ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি, কৃষকরা আশা করছেন আলু এবং সরিষার ভালো ফলন হবে।

নওগাঁর সিভিল সার্জন ডাক্তার নজরুল ইসলাম জানান, জেলার ১১টি উপজেলায় ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এমন আবহাওয়া আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে।

নওগাঁর বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত দুই দিন ধরে মেঘ ও কুয়াশায় সূর্য ঢাকা রয়েছে, এবং এ ধরনের শীত ও কুয়াশা আরও দুই/তিন দিন থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

— ইত্তেফাক/এএইচপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *