সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একদিকে বাজার থেকে প্রচুর ডলার কিনছে, অন্যদিকে পুরনো বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সময়, বিপিসি, পেট্রো বাংলা, সিভিল এভিয়েশনসহ সরকারের বিভিন্ন আমদানির চাপও ছিল, যার কারণে ডলারের দর হঠাৎ বেড়ে যায়। তবে রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ডলারের বাজার দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। রেমিট্যান্সে ২৮ শতাংশ এবং রপ্তানিতে ১২ শতাংশের প্রবৃদ্ধির কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে ডলারের দাম ইতোমধ্যে কমেছে এবং রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে নতুন বছরে ডলার বাজারে আরও স্থিতিশীলতা আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ১৩টি ব্যাংকের কাছে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে হঠাৎ বেশি দামে ডলার কেনার বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। ব্যাখ্যা চাওয়ার তালিকায় দুটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং ১১টি বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে। এ ছাড়া, আটটি পরিদর্শন দল গঠন করে ব্যাংকগুলোর তথ্য যাচাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব কারণে ডলারের দাম দ্রুত কমতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের ২১ দিনে ২০০ কোটি ৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত জুলাই-নভেম্বর সময়ে ৫ মাসে ১১.১৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬.৪৪ শতাংশ বেশি। একই সময়ের মধ্যে রপ্তানি আয় এসেছে ১,৯৯০ কোটি ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১১.৭৬ শতাংশ বেশি।
বর্তমানে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রয়েছে এবং দ্রুত বেড়ে ফের ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গত রবিবার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১৭ কোটি ডলার, যা ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে রেমিট্যান্সের ডলারে সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা দর দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। মঙ্গলবার থেকে ব্যাংকগুলোকে মৌখিকভাবে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত দু’দিনে ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে, এবং বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে ব্যাংকগুলো ১২৩ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১২৪ টাকায় ডলার কিনেছে। এর আগে, রোববার রেমিট্যান্সে ডলারের দাম ১২৬ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল, এবং খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৮ টাকায় পৌঁছেছিল, যা এখন ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায় নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে ডলার কেনার উচ্চ দামের ব্যাখ্যা চেয়ে ১৩টি ব্যাংকের কাছে প্রতিবেদন তলব করেছে, যা ডলারের দাম কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
সুত্রঃ বাংলা পত্রিকা