বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক প্রস্থান ২০২৬ সালের ২২ জানুয়ারি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘকে পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়েছে ডব্লিউএইচও থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী এক বছর সময় লাগে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনই এই প্রক্রিয়া শুরু করেন।
প্রথম মেয়াদেও ট্রাম্প ডব্লিউএইচও ত্যাগের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে তিনি সংস্থাটিকে চীনকেন্দ্রিক বলে সমালোচনা করেন।
তাঁর অভিযোগ ছিল মহামারি মোকাবিলায় ডব্লিউএইচও চীনের পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে এবং সঠিক নির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে যুক্তরাষ্ট্রকে আবার সংস্থায় ফিরিয়ে আনেন।
ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচও-তে অন্যায্য পরিমাণ অর্থ প্রদান করে আসছে এবং সংস্থাটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকটগুলো মোকাবিলায় যথাযথ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে কোভিড-১৯ মহামারি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সংকটে ডব্লিউএইচও’র ভুল পদক্ষেপগুলো এই সিদ্ধান্তের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। তাঁদের মতে এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা এবং এইচআইভি/এইডসের মতো সংক্রামক রোগ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা কমে গেলে বৈশ্বিক অগ্রগতিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ডব্লিউএইচও-এর বার্ষিক বাজেটের একটি বড় অংশই আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ২০২৩ সালে সংস্থার বাজেটের প্রায় ২০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে দেশটি। বাইডেন প্রশাসনের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচও-এর সবচেয়ে বড় দাতা ছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর কী প্রভাব ফেলবে তা এখনই বলা মুশকিল।
তবে সংস্থাটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।