বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার জন্য দূরপাল্লার মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার দু’দিন পরই এই হামলার খবর পাওয়া গেল।প্রথমবারের মতো রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার ‘এটিএসিএমএস’ (ATACMS) ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী।
বার্তা সংস্থা আরবিসি-ইউক্রেনের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট।
তবে এতে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি এর আগে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র (এটিএসিএমএস) দিয়ে এই ধরনের দূরপাল্লার হামলার অনুমতি এতদিন দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। কারণ তারা ভেবেছিল, এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করলে যুদ্ধ আরও বাড়বে।
তবে ৫ নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর এই নীতি থেকে সরে আসে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির অধীনে কিয়েভকে মার্কিন সমর্থন দেয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
প্রতিবেদন মতে, ইউক্রেন এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অধিকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম ব্যবহার করছে, যা সাধারণত এটিএসিএমএস নামে পরিচিত। কিন্তু এতদিন যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি।
এদিকে, ইউক্রেনের এই হামলার ফলে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’ বা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার শুরু হয়ে যেতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ, পশ্চিমা বিশ্ব এবং ইউক্রেনকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়ে, মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এক ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ডিক্রিতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
এর আগে রুশ আইনপ্রণেতা মারিয়া বুটিনা বলেন, বাইডেন প্রশাসন যদি ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোর অনুমতি দেয়, তাহলে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি’ তৈরি হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বাইডেন প্রশাসন যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও উসকে দেয়ার চেষ্টা করছে।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই ডিক্রিতে সই করার মধ্য দিয়ে, পারমাণবিক শক্তিধর দেশ সমর্থিত হলে একটি অ-পারমাণবিক রাষ্ট্রে মস্কোর পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করার সুযোগ আরও বিস্তৃত করেছেন পুতিন। প্রতিবেদন মতে, মার্কিন সরকার ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে আঘাত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার পরে এবং রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের ১০০০তম দিনে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুতিন।