চাঁদপুরে অ্যাসিডদগ্ধের ১০ মাস পর গৃহবধূর মৃত্যু চিকিৎসাধীন অবস্থায়

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের ছোড়া এসিডে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। এসিডে দগ্ধ হওয়ার পরে তিনি দশ মাস পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আজকে বিকেলে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল হক।

মতলব উত্তরের ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম সুজাতপুর গ্রামের আয়ুব আলীর মেয়ে মিলি আক্তার (২০)। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে অ্যাসিড ছোড়ার শিকার হন তিনি। সে সময় তিনি সাত মাসের গর্ভবতী ছিলেন এবং পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্তানের জন্ম দেন।

মিলির মা রাশেদা বেগম জানান, মমরুজকান্দি গ্রামের যুবক সফিকুল ইসলাম ওরফে মানিক নিয়মিত তাঁর মেয়েকে বিরক্ত করতেন। মিলির অন্য জায়গায় বিয়ে হলে সফিকুল প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন। স্বামী বিদেশে থাকার কারণে মিলি তখন বাবার বাড়িতে ছিলেন। ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে সফিকুল তাঁর বন্ধু জাহিদকে নিয়ে এসে মিলির ওপর অ্যাসিড ছোড়েন। এতে মিলির মুখ, পিঠ, বুক এবং হাত মারাত্মকভাবে পুড়ে যায়। এ সময় রাশেদা বেগমের (৫৫) হাত এবং ঊরুতেও অ্যাসিড লাগে।

রাশেদা বেগম আরও জানান, ঘটনার পর তাঁদের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় মিলিকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১০ মাস ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে সেখানেই তিনি মারা যান।

মিলির বাবা আইয়ুব আলী মতলব উত্তর থানায় সফিকুল ইসলাম ও জাহিদকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান জানান, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সফিকুল ইসলাম এবং তাঁর সহযোগী জাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতে তাঁরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন এবং মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।

আইয়ুব আলী কান্নায় ভেঙে বলেন, “আমার মেয়েকে বাঁচানোর জন্য আমি সবকিছু করেছি, অনেক টাকা খরচ করেছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই করতে পারলাম না। আমি এখন পুরোপুরি নিঃস্ব। যারা এই অমানবিক কাজ করেছে, তাদের ফাঁসি চাই।”

সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সানজিদাকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *