সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে তিনি পরনে নীল স্যুট ও লাল টাই, হাঁটুর ওপর হাত রেখে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছেন। টাইম তাকে ২০২৪ সালের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ট্রাম্পের রাজনৈতিক কীর্তি এবং তার ব্যক্তিগত জীবন এই নির্বাচনের পেছনে কারণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
ট্রাম্প বর্ষসেরা ব্যক্তির তালিকায় আসার পেছনে রয়েছে নানা কারণ। যদিও সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে, তিনি বারবার তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনের ফলাফল তার ব্যক্তিগত জীবনের জন্যও চ্যালেঞ্জের ছিল, কখনো গুলি এসে তার কান ছুঁয়েছে, আবার কখনো হত্যাচেষ্টা হয়েছিল। তবে এসব কিছু তাকে থামাতে পারেনি এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে আবারও জয় লাভ করেছেন তিনি।
ট্রাম্পের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়েছিল ব্যবসায় থেকে। ১৯৮০ সালে তিনি বলেছিলেন, রাজনীতি একটি ‘জঘন্য’ জীবন, তবে পরে সে মনোভাব পরিবর্তন করেন। ২০১৬ সালে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি হোয়াইট হাউসে আসেন। তার প্রথম মেয়াদ ছিল নাটকীয় এবং বিতর্কিত, তবে ২০২০ সালে তিনি ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে হেরে যান। ২০২৪ সালে আবারও নির্বাচনে দাঁড়িয়ে তিনি আবারো জয়ী হয়েছেন।
যদিও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অনেক মামলা চলমান ছিল, তবুও তার ওপর আনা মামলাগুলোর বেশিরভাগই শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়েছে বা স্থগিত করা হয়েছে। এমনকি করোনাভাইরাসের মহামারি, অর্থনৈতিক সংকট এবং অন্যান্য বিতর্কের মাঝেও তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা একাধিক মামলা, যেমন যৌন কেলেঙ্কারি এবং ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল পাল্টানোর চেষ্টার মামলা, শেষ পর্যন্ত তাকে চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারেনি।
এদিকে, বাইডেনের প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানো এবং ট্রাম্পের ওপর দুটি হত্যাচেষ্টার ঘটনা এই নির্বাচনের মঞ্চে তাকে শক্তিশালী করে তুলেছে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের প্রতি ভোটের হার ট্রাম্পের কাছে হারিয়ে গেছে। অবশেষে ট্রাম্প ৩১২ ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
তার বিজয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের মানচিত্রের বেশিরভাগ অংশ রিপাবলিকান দলের রঙে লাল হয়ে ওঠে, যা তার শক্তিশালী অবস্থানকে প্রমাণ করে। তার প্রশাসন সাজানোর পরিকল্পনাও শুরু হয়ে গেছে, যেখানে তিনি বিতর্কিত কিছু ব্যক্তিকে শীর্ষ পদে রাখার কথা ভাবছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি চীনের সঙ্গে আরও কঠোর সম্পর্ক গড়তে চান এবং ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর প্রস্তাবও দিয়েছেন।
এমনকি, ট্রাম্পের বিজয়ের পর, তার কথা অনুযায়ী, ‘আমরা এখন ট্রাম্পের যুগে বসবাস করছি’।
তথ্যসূত্র: টাইম, বিবিসি, সিএনএন