আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে প্রতিদিন দুটি নতুন আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু করবে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সহকারী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা কামাল আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ট্রেন চলাচলের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিটি ট্রেনে ৭৪৩টি আসন থাকবে এবং ১৬টি কোচ নিয়ে চলবে ট্রেনগুলো।
পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক (চট্টগ্রাম) এ বি এম কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, “চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে এখন থেকে দুটি নিয়মিত আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে।” তিনি আরও বলেন, “ঢাকা থেকে দুই জোড়া স্থায়ী ট্রেন চলাচল করলেও, চট্টগ্রাম থেকে চলাচল করা ট্রেনটি ছিল অস্থায়ী। স্থানীয় চাহিদা এবং জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এই দুটি ট্রেন চালানো হবে।”
অফিস আদেশ অনুযায়ী, সৈকত এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর ৮২১) প্রতিদিন ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে এবং সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে কক্সবাজার পৌঁছাবে। আর প্রবাল এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর ৮২২) কক্সবাজার থেকে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে। চট্টগ্রাম পৌঁছানোর পর, প্রবাল এক্সপ্রেস আবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে এবং সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার পৌঁছাবে। সৈকত এক্সপ্রেস কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা ৮টা ১৫ মিনিটে রওনা দিয়ে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে। তবে, প্রতি সোমবার সাপ্তাহিক বন্ধের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।
সৈকত এক্সপ্রেস ষোলশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামু স্টেশনে থামবে। অন্যদিকে, প্রবাল এক্সপ্রেস ষোলশহর, গোমদণ্ডী, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশনে থামবে।
রেলওয়ের তথ্যমতে, ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথটি ২০২৩ সালের নভেম্বরে উদ্বোধন করা হয়। এরপর ডিসেম্বরে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেন চালু হয়। তবে ইঞ্জিন, কোচ ও লোকবল সংকটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চালু হয়নি। পরে, স্থানীয় যাত্রীদের চাহিদা এবং সমালোচনার পর দুটি কোচ বরাদ্দ দেওয়া হয়। জানুয়ারিতে আরও একটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত বছরের ৮ এপ্রিল একটি বিশেষ ট্রেন চালু হয়েছিল, যা জনপ্রিয় হলেও ৩০ মে বন্ধ হয়ে যায়। তবে, ঈদুল আজহার সময় ১২ জুন থেকে বিশেষ ট্রেন চালু হয়, যা এখনো চলমান।
চট্টগ্রাম থেকে স্থায়ী ট্রেন চালু করার দাবী দীর্ঘদিনের ছিল। এই রুটের ব্যাপক চাহিদা এবং ট্রেনের জনপ্রিয়তা চোখে পড়েছে, বিশেষ করে দুর্ঘটনাপ্রবণ মহাসড়ক এবং ট্রেনের কম ভাড়া কারণে।
রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালু হওয়ার পর ১০ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৩ জন যাত্রী পরিবহণ করা হয়েছে এবং আয় হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা।
ইত্তেফাক/এএম